সামাজিক

দিলীপ ঘোষ অসামাজিক কথা বলেছেন, কিন্তু ভুল বলেছেন কি ??

যে কোনো ঘটনারই দুটো বিপরীতমুখী দিক থাকে। মহিলাটি প্রশ্ন শুরু করলেন এইসব বলে – ‘দিলীপ ঘোষ এবং কটূক্তি সমর্থক’ এবং ‘কোথা থেকে করেছেন এসব কোর্স’ এবং ‘উইকিপিডিয়ায় আপনার প্রোফাইলে কন্ট্রোভার্সি বলে একটা লম্বা চ্যাপ্টার আছে’ ইত্যাদি। প্রশ্ন যখন শুধু প্রশ্ন থাকে না, রাজনৈতিক উস্কানিতে পর্যবেসিত হয় তার পাল্টা আঘাত আসেই। সে আঘাতের ভাষা আরও এক কাঠি উপরে। ‘ন্যাকামী করবেন না’ এসব বাক্য কবে থেকে ওপেন ফোরামে স্বীকৃত হল ?? দিলীপের কু-বাক্যের যোগ্য স্যাঙাত কি সুজন বাবুও ছিলেন না ?? তার ঠোঁট চেপে রেখে হাসিটা অনেকদিন মনে থাকবে।

মেয়েদের বারমুডা পরা যদি অশ্লীল না হয় তাহলে তাকে বারমুডা পরতে বলা কি করে অশ্লীল হয়?? মঞ্চ থেকে সাধারণ মানুষের দিকে পা তুলে কতটা পা আমার ভেঙেছে দেখানোটা কি অশ্লীল নয় ?? বারমুডা পরলে একদিকে সুবিধাই তো হয়। পা তোলার প্রয়োজন হয় না, আবার ভাঙা জায়গাটাও দেখানো হয়ে যায়। এক সিনেমার নায়িকা এতদিন স্লিভলেস পরে ঘুরতো, ক্লিভেজ দেখিয়ে সেলফি পোস্ট দিত। কিন্তু হঠাৎ ভোটে দাঁড়িয়েই তিনি ফুল হাত ব্লাউজ, পিন করা শাড়ী কেন পড়ছেন ??? এটাকে কি নাটক বা অভিনয় বা ভড়ং বলা যাবে না ??



শহরের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত স্বভূমির অনুষ্ঠানে ডাক পাওয়া মহিলা এবং গ্রামের মাঠে কোলে বাচ্চা নিয়ে রোদ মাথায় দাঁড়ানো মহিলার মানসিকতা কি কোনদিনও এক বিন্দুতে এসে মিশবে ?? বিজেপি করার কারণে যে মায়ের ছেলেকে মিথ্যে কেসে জেলে ভরা হলো, যে মহিলার স্বামীকে মেরে গাছে ঝোলানো হল, তাদের পাশে দাঁড়িয়ে দিলীপ ঘোষ বলে আমরা ক্ষমতায় এলে ওদের হাত গুড়িয়ে দেব।

শহরে টেলিভিশনে এসে সুশীল সমাজ দিলীপ ঘোষের নিন্দে করে। কিন্তু দিলীপ ঘোষ তত ওদের নিজেদের মানুষ হয়ে যায়। যার হকের ত্রিপল চুরি হয়ে গেল, যারা ভাঙা টালির টাকা ঢুকলো পঞ্চায়েতের শালার ঘরে – সেই সমস্ত সুবিধাভোগী শ্রেণীশত্রুকে মাথা গুঁড়িয়ে দেব বলা ‘দিলীপদা’ যতটা কাছের মানুষ হতে পারে, পুরুলিয়ায় পিকনিকে গিয়ে হালকা মদের নেশায় পলাশের সাথে সেলফি তুলে ফিরে আসা মানুষ কি ততটা কাছের হতে পারে ?? মঞ্চ থেকে যখন দিলীপ ঘোষ বলে আমি সাধারণ, আপনি অসাধারণ – খুব কি ভুল বলে ??

ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যে উল্টো দিক থেকে যখন আগুনের গোলা বর্ষিত হয়, এ পক্ষ কি হতে ফুলের তোড়া সাজিয়ে বসে থাকতে পারে ?? সুবোধ বালকের হাত ধরে তো আপনি গডজিলার সাথে লড়াইয়ে নামতে পারবেন না। গডজিলাকে থামাতে তো কিংকংকেই প্রয়োজন। কিংকং জিতে গেলে সে গডজিলার থেকেও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে কি না সেই হাইপথেতিকাল সম্ভাবনা নিয়ে এখন কেন ভাববো ??



সামনে দুটো শক্তিশালী প্রতিপক্ষ থাকলে আপনি একা দুজনকে একসাথে পরাজিত করতে পারবেন না। আগে একজনকে হারান। তারপর দ্বিতীয়জনকে।

এই যে এখুনি আপনি যুক্তিতে না পেরে আপনাদের অনেকে আমাকে বিজেপি বলে গালাগাল দেবেন ভাবছেন, সেটাকেই তো কোনো রাখঢাক না রেখে দিলীপ ঘোষ বলেছে, প্রয়োজন অনুযায়ী মহিলা, দলিত, সংখ্যালঘু সাজবেন না। ক্ষমতা থাকলে একজন নাগরিকের প্রশ্ন নাগরিক হয়েই দিন।

বিজেপির পতাকা হাতে নিয়ে ঘোরা ছেলেটা মিথ্যে কেসে কেন জেলে রয়েছে ?? সে তো মহাত্মা নয় যে বেরিয়ে এসে প্রশাসনকে মিষ্টি খাওয়াবে। খিস্তিই দেবে, বদলাই নেবে। আপনি হলে কি করতেন ??

হ্যাঁ, দিলীপ ঘোষ অশালীন কথা বলেছে। অসম্মান করেছেন। কটুক্তি করেছেন। কিন্তু ভুল কিছু বলেছেন কি ?? যুদ্ধের ময়দানে একজন সৈন্য অন্য সৈন্যেকে হত্যা করে । যারা যুদ্ধের ময়দান থেকে অনেক দূরে থাকেন – তাদের কাছে সেটা অন্যায় মনে হয়। মনে হয় অমানবিক। কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে সেটাই নিয়ম, সেটাই আদর্শ। যুদ্ধের মুহুর্তে শ্লীল, অশ্লীল, সামাজিক, অসামাজিক ইত্যাদির ভাবনার বাঁধনে পড়লে নিজের গলাটাই কাটা যাবে। যুদ্ধের সময় যে সৈন্য হত্যা করে, যুদ্ধ সমাপ্ত হলে সেই সৈন্যই অন্য সৈন্যকে সম্মানের সাথে শেষকৃত্য সম্পন্ন করে।

লেখাটা ভালো লাগলে শেয়ার করুন। কমেন্ট করুন। সাইটে আরো লেখা আছে ঘুরে ফিরে দেখুন। নতুন লেখা পড়তে প্রতিদিন ভিজিট করুন এই সাইটে। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *