রাজনৈতিক

সাংবাদিকতা নাকি পেটোয়াগিরি অথবা দালালী অথবা পা-চাটা ??

নিজেকে সেকুলার দাবী করা প্রচুর লোক ফেসবুকে ঘুরে বেড়ায়, তৃণমূলের দোষে রচনা লেখে, বিজেপির দোষে এক লাইন অথবা উল্টোটা। এর থেকে যারা প্রকাশ্যে কোনো বিশেষ দল করি বলে ঘোষিত তারা অনেক সৎ – সে বিজেপি, তৃণমূল, সিপিএম যেই হোক না কেন ?? সারাদিন ধরে এক চোখ বন্ধ করে খবর করলে সেই খবরের সংস্থাকে বাজারী, দালাল ইত্যাদি অপবাদ সইতে হবে। সে আরামবাগ হোক, কলকাতা হোক, সিএন হোক কি রিপাবলিক টিভিই হোক – আপনারা কেউ কি নিরপেক্ষ ?? প্রত্যেকেরই কি কোনো নিজস্ব অ্যাজেন্ডা নেই ??

অর্ণবকে গালাগালি দিচ্ছেন কারণ সে বিজেপির পক্ষ নিয়ে কথা বলে, ওদিকে আপনি নিজে সারাদিন তৃণমূলের গুণ গাইছেন অথবা সিপিএমের অথবা কংগ্রেসের – আপনাদের মধ্যে তফাৎটা কোথায় রইলো ?? সবই একই গোয়ালের গরু। এগুলোকে সাংবাদিকতা বলে না – পেটোয়াগিরি বলে। কেউ ওকে চাটছে, কেউ একে চাটছে। আবার নির্লজ্জের মত প্রশ্ন করছে – ও কেন চাটে ??

পার্টিকর্মীদের তাও কিছু দায়বদ্ধতা, পিছুটান, আবেগ থাকে। তাদের দল পরিবর্তন মানুষ ভালো চোখে নেয় না। কিন্তু একজন সাধারণ সমর্থকের সেই দায় নেই। সাধারণ ভোটারের তো নেইই। সে কারো কেনা নয়। তার যখন যাকে খুশি সে সমর্থন দেবে। লোকসভায় বিজেপিকে, বিধানসভায় তৃণমূলকে, পৌরসভায় হয়ত সিপিএমকে ভোট দেবে – বেশ করবে – এটাই গণতন্ত্র – তার নিজস্ব স্বাধীনতা।

সমর্থকরা বা ভোটাররা যদি ভোট পরিবর্তন নাই করবে তাহলে বছর বছর ভোট নিয়েই বা কি লাভ !! আর কিসেরই বা পরিবর্তন !! যে আছে সেই বসে থাকুক জগদ্দল পাথরের মত।

অশিক্ষিত যারা মিম বানাচ্ছেন – আজ ফেসবুকে চারিদিকে তৃণমূল – তাদের গুচ্ছমূলে আরও একটু জল দেওয়ার দরকার আছে। চারিদিকে তৃণমূল বলেই তো তৃণমূল জিতেছে। তবে অন্যরাও আছে। হয়ত আজ নেই। কিন্তু আগামীতে আছে।

উত্তম কুমারের নাতবউয়ের মত এক চোখ বন্ধ করলে দেখতে পাবেন না। গণতন্ত্রে অন্যরা সাইনবোর্ড হয়ে গেলে সেটা স্বৈরতন্ত্রে রূপ নেয়। ক্ষমতায় এসে ওদেরকে সাইনবোর্ড করে দেওয়ার হুঙ্কার সব দলই দেয় – আসলে বলতে চায় ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে খুন করে দেব।

একটি সংবাদসংস্থাকে সবসময় বিরোধীর আসনেই বসে থাকতে হয়। সরকারের ভুল ত্রুটিগুলোকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হয়। মানুষের সমস্যা তুলে ধরতে হয়। কিন্তু সংবাদপত্র যদি সরকারকেই চাটতে শুরু করে তাহলে ভাই, বিপ্লব মারাস না। এক আঁজলা জল নে, তাতে ডুবে মর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *