জীবন রোজনামচা

প্রসঙ্গ নেপোটিজম

এটা খুবই স্বাভাবিক জিনিস। সব জায়গায় আছে। আমার মিষ্টির দোকান থাকলে সেটা আমার পরে আমার সন্তানকেই আমি দিয়ে যাব, পাশের পাড়ার সবথেকে ভালো মিষ্টি বানায় যে লোক তাকে কোনোদিনও দেবো না। এবার আমার সন্তান মিষ্টি ভালো বানালে লোকে খাবে, খারাপ বানালে লোকে খাবে না, দোকান উঠে যাবে। পুরোটাই যারা খাচ্ছে তাদের উপর নির্ভরশীল।

রিলায়েন্স কোম্পানীর দিকে তাকান – ধীরুভাইয়ের পর মুকেশ হয়েছে তারপর আকাশ হবে। তারপর সেই ব্যবসার মালিক তার ছেলে বা মেয়েই হবে সে যতই অযোগ্য হোক না কেন। পারলে কোম্পানী চলবে, না পারলে উঠে যাবে। কিন্তু বাবা সবসময় তার নিজের সন্তানের জন্যই করবে। যেমন সুনীল গাভাস্কর করলো কিন্তু রোহন গাভাস্কর সুযোগ কাজে লাগাতে পারলো না। ইন্দিরা গান্ধীর ছেলে রাজীব গান্ধী পারলো, কিন্তু রাজীবের ছেলে রাহুল গান্ধী পারলো না। পিসি লড়ে জায়গা করেছে, ভাইপো পারবে কি না দেখা যাক !!

আমার চারটে মামা, সব মামারাই আমাকে সমান ভালোবাসে। কিন্তু দেখা গেল মেজো মামাকে আমার বেশি ভালো লাগে। আমি মেজো মামাকে দুটো চুমু বেশি খাই। তো অন্য মামারা কি নেপোটিজম করে কাঁদবে না আমাকে আরো বেশি বেশি গিফট দিয়ে আমার থেকে আরও চুমু খাওয়ার চেষ্টা করবে ??

এটা আবার শুধু ফ্যামিলি নয়, বিভিন্ন জায়গায় হতে পারে, ধরা যাক একটা অফিস, দশজন কাজ করে। সবাই কম বেশী একই লেভেলের ট্যালেন্টেড, কিন্তু বসের কোনো একজনকে বেশী ভালো লাগে। তার সাথেই কথা বলে, তারই খোঁজ করে, অন্যদের দিকে ফিরেও তাকায় না। অথচ যাদের দিকে ফিরেও তাকায় না, তাদের মধ্যেই হয়ত সেরা কেউ আছে। কিন্তু প্রোমোশনের সময় কার প্রোমোশন হবে ?? বস যাকে পছন্দ করে। এটা স্বাভাবিক।

পাড়ার পাঁচটা ছেলে একটা মেয়েকে ভালোবাসে। সমানভাবে ভালোবাসে। তো মেয়েটা কি সবাইকেই ভালোবাসবে নাকি !! সে তাকেই ভালোবাসবে যাকে তার পছন্দ। এ প্রসঙ্গে বলি, পাড়ার পাঁচটা মেয়ে একটা ছেলেকে ভালোবাসে, ছেলেটা কাকে ভালোবাসবে ?? উত্তর – সবাইকে। কারণ ছেলদের মন অনেক বড়।

জীবন একটা সংগ্রাম। কেউ সহজেই পেয়ে যায়। কাউকে লড়াই করে নিতে হয়। কেউ সহজে পেয়ে হারিয়ে ফেলে। কেউ লড়াই করেও পায় না। লড়ে যেতে হবে। হেরে গেলে দুঃখ হবে কিন্তু থেমে গেলে হবে না। যে সহজে জিতে গেল তাকে টপকে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। চেষ্টায় সফল হতেও পারে আবার নাও পারে।

কিন্তু তাই বলে সুশান্ত সিং রাজপুত হওয়া যাবে না। পল্লবী মজুমদার হওয়া যাবে না। বিদিশা দে হওয়া যাবে না। মঞ্জুষা নিয়োগী হওয়া যাবে না। সবাই জিতবে না, সেটা মাথায় রাখতে হবে।

কলেজের কোনো মেয়েকে ভালো লাগলো কিন্তু তার বয়ফ্রেন্ড আছে। অফিসের কোনো কলিগকে ভালো লাগলো কিন্তু তার বউ আছে। তাই বলে কি আপনি থেমে থাকবেন ?? গোলপোস্টে গোলকীপার থাকবেই। তাই বলে কি খেলোয়ার গোল দেওয়ার চেষ্টা বন্ধ করে দেবে ?? সরকারী চাকরীওয়ালার বউকে নিয়ে রাজমিস্ত্রী পালিয়ে গেল আর আপনি এখনও ‘আমার কিছু হবে না’ বলে হাঁফশোল খাচ্ছেন !!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *